বাংলাদেশে বিপ্লবী তত্ত্বাবধায়ক সরকার!
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ১২:০৯
দেশের বর্তমান সঙ্কট নিরসনের একমাত্র পথ হতে পারে বিপ্লবী তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাম ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা বাস্তবায়ন করে মেহনতী মানুষের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংবিধান সভার নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। যে সংবিধান দেশের শ্রমিক শ্রেণীর আক্সক্ষাকার সমাজ তথা সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।
গতকাল পুরানাপল্টন, মনি সিং-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট ভবনের শহীদ মুনীর আজাদ হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বাম ঐক্য ফ্রন্টের উদ্যোগে এ আলোচানা সভায় জোটের সমন্বয়ক গণমুক্তি ইউনিয়নের নাসির উদ্দীন আহমেদ নাসুর সভাপতিত্ব করেন। সেমিনারে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন কমিউনিস্ট ইউনিয়নের আহ্বায়ক ইমাম গাজ্জালী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাহাত্তরের সংবিধান হলো উপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামো পুনরুজ্জীবনের কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ। একই সাথে এটা বাংলাদেশের ব্যক্তি মালিকানাভিত্তিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা এবং বুর্জোয়া শাসক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা ও একনায়কতন্ত্র কায়েমের দলিল।
বিচার বহির্ভূত রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড, রাষ্ট্রীয় অর্থ ও জাতীয় সম্পদ লুণ্ঠন, কোনো না কোনোভাবে এই সংবিধান কর্তৃক অনুমোদিত। এই সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে নিরঙ্কুশ বা একচ্ছত্র ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এই সংবিধান প্রণয়নের অথরিটি নিয়ে আগেও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল এবং বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিল, এখনো সেই প্রশ্ন খারিজ হয়ে যায়নি। তারপর ১৭ বার সংশোধনী এনে ’৭২-এর সংবিধানকে চরম স্বৈরতন্ত্রী রূপ দেয়া হয়েছে।
এতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের নিপীড়িত নর-নারী এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার মানুষ, অন্যান্য বাম ও কমিউনিস্ট ধারা ও গ্রুপগুলো আমাদের কর্মসূচিকে বিশেষভাবে বিবেচনায় নেবেন। যাতে একটি কার্যকর, ঐক্যবদ্ধ ও জাতীয় পর্যায়ে প্রভাবশালী মেহনতী শ্রেণীর রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে ওঠে। এতে আলোচনা করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার মোর্শেদ, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন, বিশিষ্ট বামপন্থী কর্মী সমর দাস, মার্কসবাদী চর্চা কেন্দ্রের এস এম শাহজাহান (ভুলু ডা:), বিপ্লবী গার্মেন্টর্স টেক্সটাইল শ্রমিক ফোরামের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম সবুজ, বিপ্লবী ছাত্র সঙ্ঘের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রায়হান জামিল প্রমুখ।
নির্বাচনে ডিজিটাল ভোট ডাকাতির পাঁয়তারা করছে সরকার : জোনায়েদ সাকি
নিজস্ব প্রতিবেদক
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তি উপেক্ষা করে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের নামে ডিজিটাল ভোট ডাকাতির পাঁয়তারা করছে সরকার।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। তিনি আরো বলেন, শুধু সরকারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ইভিএম ব্যবহারের এই তড়িঘড়ি উদ্যোগ প্রমাণ করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের কতটা আজ্ঞাবাহী। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে এমনিতেই তুমুল অনাস্থার পরিবেশ বিরাজ করছে। সেই অনাস্থার পরিবেশ দূর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে এক পাও অগ্রসর না হয়ে উল্টো ইভিএম ব্যবহার করার এই সিদ্ধান্ত স্পষ্টতই এক গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়। জনগণ এই ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না। অবিলম্বে ইভিএম ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অন্যরা বলেন, অগণতান্ত্রিক নিবন্ধন আইন এখন কেবল নতুন চিন্তা ও দল গঠনে বাধাই নয়, রাজনীতি নিয়ন্ত্রণেরও হাতিয়ার হয়ে উঠছে। ভিত্তিহীন অভিযোগে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন প্রক্রিয়া আটকে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। অবিলম্বে তফসিল ঘোষণার আগে গণসংহতিকে নিবন্ধন দেয়ার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। একই সাথে অগণতান্ত্রিক নিবন্ধন আইন বাতিল ও আরপিওকে গণতান্ত্রিক করার উদ্যোগ নেয়ার মাধ্যমে নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। কাজেই তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে।
সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন : দলের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, মনিরউদ্দীন পাপ্পু, আরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য দিপক রায়, অ্যাডভোকেট জান্নাতুল মরিয়ম তানিয়া।